রিয়াজুল হাসান খোকন:
বর্ষা সৌসুমকে সামনে রেখে উখিয়া -টেকনাফের উপকূলীয় এলাকায় বিশেষ করে জালিয়া পালং ইউনিয়ন ও বাহারছড়া ইউনিয়নে দিনে এবং রাতে চলছে চাকমা সমপ্রদায়ের নির্বিচারে ব্যাঙ শিকার। তারা প্রকাশ্যে বিভিন্ন জলাশয় ও হাওর এলাকায় তাদের সুস্বাদু খাদ্য হিসেবে পরিবেশের মহান উপকারী বন্ধু বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙকে নির্বিচারে হত্যা করছে। এতে দেখা যাচ্ছেনা স্থানীয় পর্যায়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য বিভিন্ন সংঘটন বা কর্তা ব্যক্তিদের কোনো হস্তক্ষেপ।
ব্যাঙ মানুষের কাছের বন্ধু। শত শত ভয়ঙ্কর রোগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ছোট্ট এই প্রাণিটি। এছাড়া সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে যে ব্যাঙ ভূকম্পনের পূর্বাভাস দিতে পারে, কিন্তু দেশে বিভিন্ন জায়গায় উপজাতীদের সুস্বাদু খাদ্য হিসেবে ব্যাঙ শিকার, দিনদিন বনভূমি ও জলাশয় কমে যাওয়া, পানি দূষণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া, অকারণে এদের হত্যা করা, অতি উৎসাহী মানুষের ব্যাঙের মাংস ভক্ষণ এবং ফসলের ক্ষেতে ব্যাপক কীটনাশক প্রয়োগের কারণে দিন দিন বিপন্ন হয়ে উঠেছে ব্যাঙ, আর কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন কায়দায় বিদেশে ব্যাঙ পাচার করার কারণে দ্রুত হারিয়ে যাওয়া প্রাণির তালিকায় যোগ হতে যাচ্ছে পরিবেশের পরম বন্ধু ব্যাঙ।
অথচ ব্যাঙ ডেঙ্গু রোগ, গোদ রোগ, কলেরা, টাইফয়েড, এনথ্রাক্স ও ম্যালেরিয়ার মতো শত শত ভয়ঙ্কর রোগবাহী কীটপতঙ্গ খেয়ে এসব রোগকে নিয়ন্ত্রণ করছে। বাংলাদেশে ব্যাঙের প্রজাতি সংখ্যা মাত্র ৬৩টি, দুই দশক আগেও এই ৬৩ প্রজাতির মধ্যে অন্তত ৪৫ থেকে ৫০টি বিভিন্ন প্রজাতি ব্যাঙের দেখা মিলতো, কিন্তু বর্তমান সময়ে তা নেমে অর্ধেকে এসে দাঁড়িয়েছে বলে জানা যায়। তাই উপকূলীয় এলাকার সতেচন মানুষের মতে ব্যাঙ প্রকৃতির পরম বন্ধু, এদেরকে সুস্বাধু খাদ্য হিসেবে গ্রহন করার জন্য নির্বিচারে হত্যা করতে দেওয়া যাবেনা। যারা এই অবৈধ কাজে জড়িত সঠিক প্রমানের মাধ্যমে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হোক, আর পরিবেশের মহান মূল্যবান বন্ধু ব্যাঙ সম্পর্কে জনগণকে সতেচন করতে স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন সতেচনমুলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হোক।